BBQ party 2019

বার্বিকিউ পার্টি ২০১৯

দিনটা ছিল ৩/১২/২০১৯, রাত ১১ টা।  আমরা রুমের ৫ জন, অর্থাৎ আমি, শামীম, জারিফ, অমি আর অয়ন মিলে সিদ্ধান্ত নেই আমরা একটা বার্বিকিউ পার্টি করবো। যথা ভাবনা তথা কাজ। Instant সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম আজি করবো। কজন্তু ভেবে দেখলাম আমরা মাত্র পাঁচ জন।
বার্বিকিউ পার্টির রান্না চলছে
সুতরাং আমরাই যদি পার্টি টা সম্পূর্ণ করতে যাই তাহলে আমাদের খরচ হয়ে যাবে অনেক। তাই প্লান করলাম আমরা আরো ২/৪ জন আমাদের সাথে Add করবো। একে একে বন্ধুদের ফোন করতে লাগলাম। কেউ রাজি হতে লাগলো কেউবা তাদের নানা সমস্যার কাতণে থাকতে পারবে না বলে জানাতে লাগলো। এক পর্যায়ে আমরা ভাবলাম এভাবে হবে না। আমরা বরং আমাদের ডিপ্টের সবাইকে knock দেই। যে থাকতে পারবে থাকবে, না পারলে না। সুতরাং আমার বন্ধু জারিফ সবাইকে একে একে ফোন করতে লাগলো। ফলে আমরা বন্ধুদের কাছ থেকে ভালই response পেলাম। প্রায় আমরা ২০ জক্নের মত জড় করে ফেল্লাম।
রান্না করছে আমাদের শামীম
অর্থাৎ যা আমরা আশা করেছিলাম তার থেকেও বেশি আমরা পেয়ে গেলাম। বেশ খুশি খুশি লাগছিল। শামীম আর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যেহেতু লোক জন সব complete সুতরাং আর দেরি করা যাবে না। বিকালে জারিফ আর অয়নকে পাঠিয়ে দিলাম কয়লা সংগ্রহ করতে।(কয়লা দিয়ে পুড়িয়ে BBQ করতে হয়)।
চুলার উপর জ্বলন্ত বার্বিকিউ
তারা তাদের দায়িত্ব বেশ ভাল ভাবেই স্পম্পূর্ণ করল। আমরা যা আশা করেছিলাম তারা দুই জন মিলে তার থেকেও অনেক কম দামে কয়লা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল(মাশাল্লাহ)। এরপর আমাদের যেটা দরকার ছিল সেটা হল রুটি। কারণ পোড়ানো মাংস রুটি দিয়েই খেতে হয়। তাই আমরা রুটি কেনার দায়িত্ব দিলাম শীমুল কে। সে প্রায় রাত ১০ টার দিকে রুটি কিনে এনেছিল। আমি, শামীম আর জারিফ গেলাম সন্ধ্যায় রুপাতলি বাজারে মাংস কেনার জন্য।
গোল হয়ে রান্না দেখছে আমার বন্ধুরা
কোন মতে একি সাইজের মুরগী মেলানো সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে একটা মামা আমাদেরকে একটা নিদৃষ্ট দোকানের ঠিকানা দিয়ে দিল। বল্ল সেখানে হয়তো আমরা পেলেও পেতে পারি। আর এটাও বল্ল যে সেখানে যদি না পাই তাহলে আর কোথাও হয়তো পাবো না। তাই অনেকটা ভয় নিয়ে দোকানের দিকে এগিয়ে গেলাম। এবং আলহামদুলিল্লাহ পেয়েও গেলাম।   তারপর রাত ১১ টার ভিতর আমাদের প্রায় সব কাংখিত বন্ধুরা একে একে চলে আসলো।
রান্নার কাজে সাহায্য করছে আমার বন্ধুরা
কিন্তু দূর্ভাগ্য ক্রমে ২ জন বন্ধু জানালো তারা কিছুতেই আসতে পারবে না। তখন আমরা একটু দূশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। কারণ যেহেতু বাজার ২০ জনের জন্য করা সেহেতু ২ জন না আসা মানে টাকার ভারটা আমাদেরকেই বইতে হবে। অবশেষে জারিফ ভেবে বল্ল সে তার দুই জন বন্ধুকে খবর দিতে ভূলে গেছে। তাদেরকে ফোন করলে হয়তপ আসতে পারে। কিন্তু তখন বাজে রাত ১০ঃ৩০ টা। এত রাতে তারা আসবে কিনা সেটা নিয়েও কিচগুটা সন্দেহ মনে বিরাজ করছিল। কিন্তু জারিফ বল্ল যেভাবেই হোক তাদের দুই জনকে সে আনবেই। ফোন দেওয়া হল দুই জনকে(আবদুল্লাহ ও তানজিল). যেটা ভয় করেছিলাম সেটাই, এত রাতে তারা আসতে অস্বীকৃতি জানালো। তারপর ফোনটা দেওয়া হল আমার কাছে। আমি তাদেরকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম। নানান কথা বলতে বলতে তারা অবশেষে রাজি হল এই শর্তে যে, যদি তারা গাড়ি পায় তাহলে আসবে,  না পাইলে না। আলহামদুলিল্লাহ তারা গাড়ি পেয়েছিল। যাই হোক ১১ঃ১০ এর দিকে আমাদের রান্নার কাজ শুরু হয়ে গেছিল। জানিয়ে রাখি, মুরগী কোটার দায়িত্বে ছিল শামীম, আর ঝাল পেয়াজ মশলা বাটার দায়িত্বে ছিলাম আমি জারিফ আর অভি। রান্নার দায়িত্বে নিয়েছিল আমাদের শামীম।  তার সাথে স্বত স্ফুর্ত ভাবে সাহায্যে হাত লাগিয়েছিল  শীমুল আর সিফাত। ছাদের উপরেই আমরা রান্নার আয়োজন করেছিলাম৷ বপ্রায় এক বছর পর সব বন্ধুদের এক যায়গায় পাএয়ার আনন্দটা আমরা ঠিক ধরে রাখতে পারি নি। তাই চিল্লা চিল্লি, হৈ হুল্লোড়, হাসা হাদি, গান গাওয়া শুরু করে দিলাম। আমাদের হৈচৈ এর আওয়াজ এত ভারী আর এত জোরালো ছিল যে সেই শব্দ আমাদের পাশের প্রতিবেশিদের কানে শুলের মত বিধছিল।
রান্নার সময় তোমা আমাদের একটা দূর্দান্ত সেলফি
তাই সেই রাতে তারা আমাদের সামনে হাজির হয়েছিল কম্পলেইন নিয়ে। আমাদেরকে বল্ল তাদের বাসাতল্র লোক অসুস্থ্য, সুতরাং কোন ভাবে জোরে চিল্লানো যাবে না। আমরা মেনেও নিয়েছিলাম। তবুও আবেগ আমাদেরকে ছাড়তে চাই নি। তাই নিজের অজান্তেই আবার মাঝে মাঝে চিল্লানো শুরু করতেছিলাম, আর আমাদের মধ্যে কেউ আমাদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছিল যে আমরা অলরেডে কম্পলেইন খেয়ে বসে আছি। তখন আমরা আবার থামতাম। বেশ আনন্দে কেটেছিল আমাদের দিনটা। যেহেতু আয়োজন করা হয়েছিল ২০ জনের কিন্তু খাওয়ার সময় হটাৎ ফারহান চলে এসেছিল। অর্থাৎ ২১ জন হয়ে গেছিল। তাই আমাদের শামীম আর জারিফ নিজেদের খাবারের কিছু অংশ sacrifice করেছিল। সারারাত আমরা জেগে ছিলাম। খাওয়া শেষে আমাদের রুমেই ছোট খাট নাচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হিয়েছিল। যেখানে আমরা কম বেশি সবাই নেচেছিলাম। রাত প্রায় ৪ টা এর দিকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল আমরা বাকী রাতটা ভার্সিটিতে কাটাবো। কিছু লোক সম্মতি দিলেও কেউ কেউ ভেটো দিয়েছিল। যাই হোক যে কজন আমরা রাজি ছিলাম তাদেরকে নিয়েই আমরা ভার্সিটিতে চলে গেলাম। সেখানে সারারাত অনেক মজা, আড্ডা আর ছবি তোলার মাধ্যমে আমরা পুরা দিনটাকে বেশভাবে উৎ্যাপন করেছিলাম। স্মরণীয় হয়ে থাক এমন দিন আমাদের প্রত্যেকের জীবনে।

সেদিন পার্টিতে যারা যারা অংশগ্রহন করেছিলঃ(২১ জন)


  1. হাফিজুর রহমান
  2. জারিফ
  3. শামীম
  4. অয়ন
  5. অমি
  6. অভি
  7. তানজিল
  8. মামুর
  9. শাহজালাল
  10. মুহিত
  11. শীমুল
  12. নান্নু
  13. রনি
  14. শীতাব
  15. ফারহান
  16. হাসিব
  17. আবদুল্লাহ
  18. সিফাত
  19. সিফাত ২
  20. সাফাত
  21. সাদিকুল

আরো কিছু ছবিঃ

 




















Post a Comment

Previous Post Next Post