একটা অভাগা বিকেলের গল্প
দিনটা ছিল বেশ শীত ঘন মুহূর্ত। বিকেল বেলা। ঠিক ৪:০০ টা বা ৪:৩০ এর কাছা কাছি সময়। অর্থাৎ প্রায় সন্ধ্যার মুহুর্ত।
"বাইরে দাঁড়িয়ে একটা সেল্ফি"
আমরা চলে গেলাম ঠিক খালেক সড়ক দিয়ে সোজা আমার বন্ধু অরুপের বাসায়। গিয়ে দেখি তাদের মেইন গেটে তালাবধ করা। ফোন দিয়ে জানতে পারলাম সে তার এক বন্ধুর বাসায় অবপ্সথান করছে। আসতে ১৫ মিনিটের মত সময় লাগবে। রুমের পাশ দাঁড়িয়ে ফাকা বিলটাকে অবলোকন করতে লাগলাম। চারপাশের পরিবেশ ও বাড়িগুলাও লক্ষ্য করতে লাগলাম।
পড়ন্ত বিকেলে একটা ছবি।(জারিফ)
দেখলাম বেশ বড় একটা ফাঁকা বিল পড়ে আছে। যার কছুটা অংশে আগাছার মত কিছু গাছ জন্মে আছে। আমাদের স্থানীয় ভাষায় যেটাকে আমরা "হুগলা" বলে থাকি। পরবর্তিতে জানতে পেরেছিলাম বৃষ্টির দিনে এই মাঠেই নাকি আমার বন্ধুরা ফুটবল খেলা করে। আশে পাশের যে বাড়িগুলা দেখেছিলাম সে গুলা সবি ফ্যামিলি বাসা ছিল। তবে আমার বন্ধুর বাসার ঠিক সম্মুখ ভাগটায় যে বাসাটা ছিল সেটা ভার্সিটির মেয়েরা থাকতো। অবশ্যই এই নিয়ে পরবপ্ররতিতে আমার সাথে অনেক মজা করেছিল আমার বন্ধুরা। যাই হোক ১৫/২০ মিনিটের মধ্য্যেই আমার বন্ধু চলে আসলো। গেট খুলে নিয়ে গেল ঠিক ২ তলার উপর। ডানে ও বায়ে ২ টা গেট। বাঁয়েরটাতেই থাকে আমার বন্ধু অরুপ।
আমার বন্ধু অরুপ আর আমি।
আর ডানেরটাতেই থাকে লিমন। প্রথমে বন্ধুর রুমে প্রবেশ করলাম। সেখানে থাকা আরো বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ হল। সবাই অবশ্যই ফোন নিয়েই ব্যস্ত ছিল। রুমে ঢুকে কিছুক্ষণের মধ্যেই রুম দেখা শুরু করলাম। যদিও আমরা যে রুমটা নিব সেটা লিমনের রুম তবুও আমরা অরুপের রুম দেখতে লাগলাম। তার কারণ হল এই দুইটা ফ্লাটের রুমগুলা একই সাদৃশ্যপূর্ণ। রুমগুলার স্ট্রাকচার বেশ পছন্দ হল। একটা বড় ডায়নিং(আয়াতাকার) ও দুটো রুম ছিল। দুইটা বাথরুম ও একটা কিচেন ছিল। দেখা শেষে অরুপের বিছানায় বসে অনেক্ষণ মজা করলাম। রুম সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত জানার পর আমার অন্য রুমমেট অমিকে ফোন করা হল। কারণ আমাদের বন্ধুদের মধ্যে ওই ছিল সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত। তাই আমরা জানি ওর যদি রুম পছন্দ হয় তাহলে আমাদের বাকীদের আর কোন আপত্তি থাকে না। তাছাড়া আমরা ছিলাম ৫ জন। কিন্তু রুমের জন্য দরকার ছিল ৬ জনের। এই একজনের এক্সট্রা ভাড়া যাতে অমি কিছুটা কেয়ার করে সেই জন্যই মূলত তাকে ফোন করা হয়েছিল। ফোনের জবাবে সে বল্ল "রুম যদি তোদের পছন্দ হয় নিয়ে নে। ফ্লাট ছাড়িস না। ফ্লাট ছাড়লে আর ফ্লাট পাওয়া যাবে না। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ৭৫০০ টাকার ভিতরে ফ্লাট টা নিয়ে নেওয়া। স্রি প্লান মোতাবেক আমরা বাড়িওয়ালার ছেলের সাথে কথা বল্লাম। কিন্তু ছেলের সাথে কথা বলার পর আমাদের মনটা পুরা ভেঙ্গে গেলিয়েছিল। তিনি ৮২০০ টাকার এক টাকাও কমে বাসা ভাড়া দিবেন না। এছাড়া তিনি কিছু রেষ্ট্রিকশান ও দিয়েছিলেন যেগুলা আমাদের ব্যাচেলরদের জন্য না থাকায় ভাল।- রাত ১২ টার পর মেইনগেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে।
- রাত ১২ টার পর ছাদে যাওয়া যাবে না
- কোন রকম হৈ চৈ করা যাবে না
- কোন পার্টি করলে অনুমতি নেওয়া লাগবে। ইত্যাদি।
যাই হোক বাসাটা আমরা পাবো না জেনে সেখান থেকে চলে আসলাম। আমাওরা বাসাটা নিতে পারবো না জেনে আমার বন্ধু অরুপের মন খুব খারাপ হয়ে ছিল। সে চেয়েছিল আমরা যদি সেখানে উঠি তাহলে আমাদের কাছ থেকে সে অনেক বিষয়ে লেখা পড়ার দিক থেকে হেল্প পাবে। যাই হোক কি আর করার। ভাগ্যে যা থাকে না তা তো আর জোর করে পাওয়া যায় না।
Post a Comment